লম্বা হওয়ার চিন্তা প্রায় সবার মাথাতেই আসে। যারা খাটো টাইপের মানুষ তারা প্রতিদিন নানান সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন পার করেন। অনেকের ধারণা যে আমাদের লম্বা হওয়ার সময় ১৬-২০ বছর পর্যন্ত তবে এটি পুরোপুরি সত্য না আমাদের লম্বা হওয়ার ব্যাপারটা বেশির ভাগ নির্ভর করে জেনেটিকসের উপর। তাই লম্বা হওয়ার ব্যাপারটা মা-বাবার উচ্চতার উপর অনেকটা নির্ভর করে।
আমাদের মধ্যে অনেকই বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে থাকেন দ্রুত লম্বা হওয়ার জন্য ঔষধ খাওয়াটা যুক্তিগত না তবে এই ঔষধ গুলো লম্বা হতে কাজে দিলেও ঔষধ গুলোর কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই আপনি যদি সাইড ইফেক্ট ছাড়া লম্বা হতে চান তাহলে কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ে খুব দ্রুত লম্বা হতে পারবেন।
ভিটামিন-ডি গ্রহণ করা
আমরা সবাই জানি মেরুদণ্ড যত বড় হবে আমাদের শরীরের উচ্চতাও তত বেশি হবে। যাদের মেরুদণ্ড ছোট হয় বা বাঁকা থাকে তাদের উচ্চতা বাড়ে না। ভিটামিন-ডি আমাদের মেরুদণ্ড বৃদ্ধি ও হাড়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লম্বা হওয়ার জন্য আপনাকে বেশি বেশি ভিটামিন-ডি গ্রহণ করতে হবে। ভিটামিন-ডি গ্রহণের সবথেকে ভালো উৎস হলো সূর্যের আলো সকালের ও বিকেলের রোদে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। এছাড়াও দুধ ও ডেয়ারি প্রোডাক্টেও ভিটামিন-ডি রয়েছে।
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার
শরীরের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ক্যালসিয়াম খুব ভালো কাজ করে। ক্যালসিয়াম হাড় বৃদ্ধি ও শক্ত করার পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য কজের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়াম উচ্চ কোয়াগুলেশন ও হাড়ের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। খাবারের মাধ্যমে খুব সহজেই শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পেয়ে যাবেন। ক্যালসিয়ামের জন্য দুধ, ডিম, বাদাম ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন। এছাড়াও অনেক খাবারে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় আপনি আপনার সুবিধা মত খাবার বেছে নিতে পারেন।
আয়রন জাতীয় খাবার
আয়রন মাংসপেশী বৃদ্ধি করে থাকে এবং শরীরে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। আয়রন শরীরে উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শারীরিক বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এছাড়াও আয়রন আমাদের শরীরের জীবাণু ধ্বংসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আয়রন জাতীয় অনেক খাবার রয়েছে যেমন বীট সবজি, মাংস, ড্রাই ফ্রুট ইত্যাদি খাবার গুলো আয়রনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুমানো
শরীরের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ঘুমের খুব বড় অবদান রয়েছে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও নানান সমস্যা শরীর থেকে দূরে রাখে। পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য আপনাকে সারাদিনে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন এক টাইমে ঘুমানোর এবং তার সাথে শক্ত বেডে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এতে আপনার উচ্চতা খুব দ্রুত বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
আপনি খাবার ও ঘুমের পাশাপাশি কিছু সহজ ব্যায়ামের মাধ্যমে খুব দ্রুত উচ্চতা বৃদ্ধি করতে পারেন। উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য খাবার ও ঘুম ছাড়াও ব্যায়াম খুব বড় ভুমিকা পালন করে। উচ্চতা বৃদ্ধির অনেক ব্যায়াম রয়েছে তাই আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন এবং এর মধ্যে কয়েকটি সহজ ব্যায়ামও রয়েছে।
বাইসাইকেল চালানো
উচ্চতা বাড়ানোর ব্যায়াম গুলোর মধ্যে আপনি বাইসাইকেল চালাতে পারেন। বাইসাইকেল চালানোর সময় আপনার বাইসাইকেলের সিটটি এমন উচ্চতায় রাখবেন যাতে প্যাডেল দেওয়ার সময় পা যেন সোজা থাকে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন সিটের উচ্চতা যেন বেশি না হয় সিটের উচ্চতা বেশি হলে আপনার হাটুর জয়েন্টের ক্ষতি হতে পারে। লম্বা হওয়ার জন্য প্রতিদিন ১ ঘন্টা বাইসাইকেল চালানোই যথেষ্ট তবে প্রথম প্রথম কষ্ট হতে পারে তাই শরীরে চাপ না দিয়ে আস্তে আস্তে সময় বাড়াতে পারেন।
বারে ঝুলে থাকা
লম্বা হওয়ার জন্য বারে ঝুলে থাকা একটি কার্যকারী প্রকৃয়া। বারে ঝুলে থাকার ক্ষেত্রে আপনাকে উঠানামা করার দরকার নেই। প্রতিদিন সোজা হয়ে ১-২ মিনিট ঝুলে থাকলেই যথেষ্ট। এই প্রকৃয়াটি আপনাকে লম্বা হওয়ার পাশাপাশি আপনার হাতের পেশী শক্ত ও মোটা করে। দ্রুত লম্বা হওয়ার জন্য আপনি বারে ঝুলে থাকার প্রকৃয়াটি ব্যবহার করতে পারেন।
দেয়ালে পিঠ ঘেঁষে দাঁড়ানো
এই ব্যায়ামের সময় আপনাকে শুধু দেয়ালে পিঠ ঘেঁষে পা সামনের দিকে দিয়ে দাঁড়াতে হবে। এই ব্যয়ামের সময় খেয়াল রাখবেন পিঠ যেন দেয়ালের সাথে লাগানো থাকে এবং পা দিয়ে আপনার শরীরকে দেয়ালের দিকে ধাক্কা দিবেন। এই ব্যায়ামে আপনি আরেকটি ব্যায়াম যুক্ত করতে পারেন সে ক্ষেত্রে দেয়ালের সাথে একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দুটো উপরে তুলে আস্তে আস্তে নামাতে হবে। এই ব্যায়াম খুব দ্রুত লম্বা হতে সাহায্য করে।
দ্রুত লম্বা হওয়ার জন্য আপনাকে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন শরীরচর্চাও করতে হবে। এই খাবার ও ব্যায়াম গুলি দ্রুত লম্বা হতে সাহায্য করে। লম্বা হওয়ার জন্য আপনি এই কাজ গুলো করতে পারেন ঠিক মতো এই কাজ গুলো করলে খুব দ্রুত আপনি আপনার শরীরে পার্থক্য লক্ষ করতে পারবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন