মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি খুব সহজে এই সমস্যাটি সমাধান করতে পারবেন। মসুর ডালের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তার জানতে চাইলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
মসুর ডালের উপকারিতা
মসুর ডাল না হলে ভাত খেতে পারে না এমন মানুষের সংখ্যা আমাদের দেশে আনেক। শুধু আমাদের দেশেই নয় সারা পৃথিবীতে এটি একটি জনপ্রিয় খাবার। মসুর ডাল দিয়ে তৈরি হয় নানান রকম মুখরুচক এবং পুষ্টিকর খাবার যেমন ডালের চরচরি‚ নিরামিষ, পিঁয়াজু, ডালের ছোপ, আম ডাল ইত্যাদি মুখরুচক খাবার।
মসুর ডাল প্রোটিনের আধার বলে একে মাংসের বিকল্প হিসাবে ধরা হয়। তাছাড়া মসুর ডাল শুধু সুস্বাদু নয় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন। যেমন খণিজ পদার্থ, আশ, ভিটামিন বি টু, শর্করা, আমিষ,খাদ্য শক্তি খাদ্য শক্তি ইত্যাদি। তাছাড়া রয়েছে প্রতি ১০০গ্রাম মসুর ডালে জনিয় অংশ ১২.৪গ্রাম খণিজ পদার্থ, ২.১গ্রাম আশ, আমিষ ২৫.১গ্রাম, ভিটামিন বি টু ৫৯ মিলি গ্রাম থাকে।
তাছাড়া মসুর ডাল আমাদের অন্যতম প্রধান খাদ্য শস্য। বিভিন্ন গবেষণা দেখা গেছে যে নিয়মিত মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সম্বৃদ্ধ খাবার খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেক টাই কমে যায়। মসুর ডালের প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আশ রয়েছে ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য জন্য এটি একটি প্রধান খাবার।
মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক
মসুর ডালের অপকারিতা রয়েছে। কারণ অতিরিক্ত মসুর ডাল খেলে শরীরলের ওজন ও বৃদ্ধি পায়। পুষ্টিকর খাবার বেশি খেলে পাকতন কাযকর বন্ধ করে যার ফলে পেটে সমস্যা হয়। সকল ধরনের পুষ্টি থাকার কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
সকল খাবার উপকার ও অপকার রয়েছে তা বেশি খেলে তা শরীরলের জন্য ক্ষতিকর। মানবদেহে যে পরিমান পুষ্টি দরকার তার চেয়ে বেশি গ্রহন করলে শরীরলে নানা রকম অসুখ দেখা দিবে। যেমন ওজন বেড়ে যাওয়া, আমরা যে পরিমান পুষ্টি গ্রহন করবো তা কাজে লাগাতে হবে না হলে নানা ভাবে অসুবিধা পরতে হবে।
মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
যেহেতু মসুর ডালে আশ এবং ভিটামিন বেশি সেহেতু মসুর ডাল দিয়ে অতিসহজেই ফর্সা হওয়া যায়। এতে আরো রয়েছে প্রচুর পরিমান ফাইবার ও প্রোটিন তাই সহজে মুখে কালো দাগ দূর করে মুখকে ফর্সা করে। তাছাড়া দুধের সাথে মসুর ডাল মিশিয়ে ব্যবহার করলে এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং এটি বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে থাকে। এটি ব্যবহার করলে ত্বকের ময়লা বের করে দেয় ফলে ত্বক দেখতে আরো ফর্সা হয়।
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা
প্রাচীন কালে মসুর ডাল খাবারের পাশাপাশি ত্বকের যত্ন ব্যবহার করা হতো। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর এবং নরম। এছাড়া মসুর ডালে সাথে দুধ ব্যবহার করলে এটি ত্বকে সফটনেস আনবে। মধু এবং মসুর ডাল ব্যবহারে ত্বক দেখতে আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠবে। তাছাড়া মসুর ডাল বেটে ত্বকে লাগালে ত্বক দেখতে আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠবে।
মসুর ডাল খেলে কি মোটা হয়
এটি আপনার শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদয় রোগ এবং স্টোকের ঝুকি কমিয়ে দিয়ে আপনার ধমনিকে পরিষ্কার করে। মসুর ডালের ফাইবারে আরো উপকারিতা রয়েছে। এটি চিনির পরিমান কমিয়ে দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তাছাড়া এটি উচ্চ রক্ত চাপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে আশ রয়েছে।
প্রতিদিন মসুর ডাল খেলে কি হয়
অতিরিক্ত মসুর ডাল খাওয়ার ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আবার অতিরিক্ত মসুরি ডাল খেলে নানান প্রকার রোগ দেখা দিচ্ছে। এছাড়া মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে শতকরা জাতীয় উপাদান রয়েছে এগুলো বেশি পরিমাণে খাওয়ার শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
যদি আপনি হার্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য মসুরি ডাল ভালো কারণ বলা হয়ে থাকে হার্টের জন্য মসুরি ডাল ভালো কাজ করে। মসুর ডাল বেশি খাওয়ার ফলে গ্যাস এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মসুর ডালের ফেসপ্যাক
মসুর ডালের ফেস প্যাক ব্যবহার করে ত্বককে ফর্সা করা যায়। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বক হয়ে উঠে ফর্সা এবং নমনীয়।
এটি তৈরি করার প্রসেস নিচে দেওয়া হলো:
- প্রথমে ৩ চা চামিচ মসুর ডালের ফাকি নিতে হবে,
- এরপর ২ চামিচ আতবচালের গুঁড়ো নিতে হবে,
- এরপর দিয়ে দিব ১/২ চামিচ হলুদের গুঁড়ো,
- তার পর নিব ২চা চামিচ কাঁচা দুধ.
এই সকল উপাদান সুন্দর করে সব মিশিয়ে নিতে হবে। মসুর ডাল প্রাচীনকাল থেকেই খাবারের পাশাপাশি রূপচর্চাতে ব্যবহার হয়ে আসছে। আমাদের দাদা-দাদী আগে থেকে এগুলো তাদের রূপচর্চটা করতো।
এটা কিভাবে ব্যবহার করবেন তা নিচে দেওয়া হলো অল্প পরিমাণ হাতে নিয়ে আপনার মুখে হাতে ঘাড়ে যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। তারপর ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন ফেললেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করবেন তাতে আপনার মুখের ময়লা দূর হবে এবং ত্বক দেখতে উজ্জ্বল হবে।
মসুর ডালের পুষ্টিগুণ
মসুর ডাল একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার। এতে রয়েছে নানান প্রকার ভিটামিন, আমিষ, শতকরা, আশ, ফাইবার ইত্যাদি এগুলো আমাদের দেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার এটি খেলে হার্টের সকল সমস্যা দূর হয়।
তাছাড়া এটি দিয়ে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা যায় যেমন ত্বকের কালো দাগ দূর করা যায় ত্বকে ফর্সা করা যায় এবং ত্বকে উজ্জ্বল করা যায়। এটা আমাদের দেহের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার। যাদের ওজন কম আছে এটি নিয়মিত খাবার ফলে ওজন বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া নানান রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মসুর ডাল দিয়ে ত্বকের সমস্যা সমাধান করা যায় কালো দাগ দূর করা যায়।
চুলের যত্নে মসুর ডাল
চুলের খুশকি দূর করার জন্য মসুর ডালের পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। তাছাড়া মাথা চুলকানো সময়ে ডালের পানি ব্যবহার করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এই ডালের পানি আমরা ফেলে না দিয়ে গাছের টবে দিয়ে সার হিসাবে ব্যবহার করতে পারি।
মসুর ডাল ধোয়ার পরে পানি ফেলে না দিয়ে রান্না করার পরে আমরা মুখটি ধুয়ে নিতে পারি ধোয়ার পর ৫-৬ মিনিট রেখে দিতে পারি তারপর আপনি দেখতে পারবেন যে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হয়ে গেছে।
শেষ কথা
আজকের আলোচনা থেকে আপনারা জেনেছেন মসুর ডালের ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে। যদি এই সকল বিষয় জানার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন‚ তাহলে পোস্ট এর নিচে আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন