কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে এই সম্পর্কে আপনার যদি না জেনে থাকেন। তাহলে আজকের
এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেক মানুষের গা ঘামে। কিন্তু কোন ভিটামিনের অভাবে
ঘামে সেটা সম্পর্কে হইত তেমন কোনো ধারণা নেই। সেজন্য আজকে আমি এই আর্টিকেলে
সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে অতিরিক্ত ঘাম দূর করার
ঘরোয়া উপায়, মাথা ঘামলে কি চুল পড়ে, কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে, শীতে ঘাম
হওয়া কোন রোগের লক্ষণ, ঘুমালে শরীর ঘামে কেন, এই সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে
যাবেন।
ভূমিকা
পৃথিবীর সকল মানুষের গা ঘামে কিন্তু কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে সেটা হয়তো
অনেকেই জানেন না। গা ঘামার কারণে মানুষ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়েন। একটু কাজ না
করতেই গা ঘেমে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত গা ঘামার কারণে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা
দিতে পারে। অনেকে আবার মাথা ঘামলে কি চুল পড়ে এটা নিয়ে চিন্তার মধ্যে থাকেন।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে সমস্ত বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।
যদি আপনি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়তে পারেন, তাহলে আশা করি আর্টিকেল
থেকে আপনি একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নিন।
ঘুমালে শরীর ঘামে কেন
ঘুমালে শরীর ঘামে কেন এই ধরনের প্রশ্ন প্রায় কম বেশি অনেকেই করে থাকেন। অনেক
মানুষের ঘুমালে শরীর ঘামে কিন্তু তারা জানেনা যে কেন ঘামে। তাই আজকের এই
আর্টিকেলে ঘুমালে শরীর ঘামে কেন এই সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
তাই যদি আপনি এই সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি
ধৈর্য সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নিন।
হরমোনের পরিবর্তনঃ অনেকেরই হরমোনের সমস্যা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের হরমোন
জনিত সমস্যার কারণে রাতে শরীর ঘামতে পারে।
কিছু ওষুধঃ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ঘুমালে শরীর ঘামতে
পারে।
গরমের পরিবেশঃ যদি আপনার ঘুমের ঘর অত্যন্ত গরম হয়, তাহলে শরীর ঘামতে
পারে। এছাড়াও যদি আপনি অতিরিক্ত গরমে কম্বল ব্যবহার করেন বা পোশাক পরিধান করে
থাকেন তাহলে আপনার ঘুমালে শরীর ঘেমে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
সংক্রমণঃ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাল সংক্রমণ সমস্যার কারণে ঘাম হতে
পারে। যেমন যক্ষা বা এইচআইভি (HIV) এই সমস্যাগুলো হলে ঘুমালে শরীর ঘামতে
পারে।
উদ্বেগ ও মানসিক চাপঃ চাপ, উদ্বেগ, বা দুঃস্বপ্নের কারণেও ঘুমের
সময় ঘাম হতে পারে।
অ্যালকোহলঃ যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যালকোহল অত্যাধিক গ্রহণ করেন। সেই
সাথে আরো অন্যান্য নেশা জাতীয় কোন কিছু গ্রহণ করেন। তাহলে আপনার ঘুমালে শরীর
ঘামতে পারে।
হাইপোগ্লাইসিমিয়াঃ যদি আপনার রক্তের শর্করা অত্যন্ত কম হয়ে থাকে, তাহলে
আপনার ঘুমের সময় শরীর ঘামতে পারে।
ঝাল জাতীয় খাবারঃ যদি আপনি অতিরিক্ত ঝাল খেয়ে থাকেন বা মসলাযুক্ত খাবার
অথবা ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করেন। তাহলে আপনার রাতে ঘুমালে শরীর ঘামতে
পারে।
ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ অনেক সময় দেখা যায় ক্যান্সার মানুষের বিভিন্ন
সমস্যা তৈরি করে। তবে ক্যান্সার থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কারণেও আপনার
ঘুমালে শরীর ঘামতে পারে। তবে এই সমস্যাটি পুরুষদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে।
শীতে ঘাম হওয়া কোন রোগের লক্ষণ
অনেকেই জানি যে গরমের সময় ঘাম হওয়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু অনেকের আবার
শীতকালেও ঘাম হয়ে থাকে। কিন্তু এই শীতে ঘামা কোন রোগের লক্ষণ এটা কি আমরা
জানি? হয়তো অনেকেই জানিনা। তাই এই শীতকাল আসলে অবশ্যই আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
কেননা শীতকালে ঘাম হলে বিভিন্ন রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম
রোগ হচ্ছে হার্টের সমস্যা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা।
এই সমস্যাগুলো যদি হয় তাহলে আপনার শীতেও শরীর ঘামতে পারে। এছাড়াও শীতে হার্ট
ব্লক হলেও শরীর ঘামতে পারে। গরমকালে যে শরীর থেকে ঘাম বের হয় এইটা স্বাভাবিক।
কিন্তু সবার জন্য এটা স্বাভাবিক নয়। কারণ সব সময় ঘাম হওয়াটা বিভিন্ন রোগের
কারণ হতে পারে। অনেকে আবার রাতে ঘুমিয়ে পড়লে দেখা যায় যে শরীর ঘেমে
যায়।
তবে অতিরিক্ত ঘেমে গেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন
স্নায়ু রোগ, ক্যান্সার জনিত আরো বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তাই
অতিরিক্ত যদি আপনি ঘেমে থাকেন তাহলে বসে না থেকে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ
গ্রহণ করুন। আশা করি শীতে ঘাম হওয়া কোন রোগের লক্ষণ সেই বিষয়টি সম্পর্কে আপনি
একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে
আপনারা কি জানেন যে কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে? হয়তো অনেকেই জানেন না। তাই
আজকের এই আর্টিকেলে সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যদি আপনি এই বিষয়টি
সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। যদি আপনি সমস্ত বিষয়
ভালোভাবে পড়তে পারেন তাহলে আপনার সমস্যার সমাধান এই আর্টিকেলের মধ্যে থেকেই
পেয়ে যাবেন। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ু্ন। চলুন তাহলে জেনে নিন কোন
ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে।
ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে গা ঘামে। গা ঘামলে খুবই অস্বস্তিকর মনে হয়। বিভিন্ন
জায়গায় যে অতিরিক্ত শরীর ঘামলে মানুষ এটা নিয়ে অনেক হাসাহাসি করে।
স্বাভাবিকের চেয়ে যদি আপনার অতিরিক্ত গা ঘামে তাহলে আপনার বিভিন্ন রোগের লক্ষণ
দেখা দিতে পারে। যেমন স্নায়ু রোগ, ক্যান্সারজনিত সমস্যা ইত্যাদি। গা ঘামা খুবই
বিরক্তকর একটি জিনিস। অতিরিক্ত গা ঘামার কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে।
শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাবেই গা ঘমার কারণ বলা সম্ভব নয়।
বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি এবং অন্যান্য অনেক কারণে গা ঘামতে পারে। ভিটামিন ডি এর
কারণেও গা ঘামতে পারে। কারণ ভিটামিন ডি এর অভাবে বেশি ব্যাথা এবং দুর্বলতা
সৃষ্টি হতে পারে যা শারীরিক পরিশ্রমের সময় ঘাম অনেক বৃদ্ধি করতে পারে। তবে যদি
আপনি ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতি পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনার গা ঘামা থেকে মুক্তি
পাবেন। তাই বেশি বেশি ভিটামিন বি ১২ যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন মাছ,
সবুজ শাক, দুধ, ডিম, কলা, তরমুজ, কামরাঙ্গা, পেঁপে, আম ইত্যাদি।
যদি আপনি এই সকল খাবার খেতে পারেন তাহলে আপনার ভিটামিন বি ১২ এর অভাব পূরণ হবে।
এছাড়াও যাদের শরীর দুর্বল হয়ে যায় তারা আয়োডিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন।
যেমন মাছ, মাংস ইত্যাদি। তাছাড়া পরিষ্কার পানি পর্যাপ্ত পরিমাণ খেতে পারেন।
এতে করেও আপনার গা ঘামা থেকে মুক্তি পাবেন। আপনার যদি অতিরিক্ত ঘাম হয় তাহলে
কারণ নির্ণয় করার জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। আশা করি কোন
ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে সেই বিষয়ে একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
মাথা ঘামলে কি চুল পড়ে
গরমের সময় আমাদের শরীর থেকে প্রচন্ড ঘাম বের হয়। প্রচন্ড রোদে ঘোরাফেরা করলে
স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত শরীর ঘেমে যায়। বিশেষ করে মাথার তালু ঘেমে যায়।
তবে মাথার তালু স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় ঘেমে গেলে চুলের ক্ষতি হতে
পারে। তবে স্বাভাবিকভাবে সবারই মাথার তালু ঘেমে থাকে। এতে চুলের বিশেষ কোনো
সমস্যা হয় না। কিন্তু গরমে আবহাওয়ার কারণে চুলের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত মাথার তালু ঘেমে গেলে চুলের গোড়ায় হেয়ার ফলিকল জমতে শুরু করে।
তবে এই ফলিকলগুলো চুলের বৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনার চুলের
গোড়ায় ঘাম জমে থাকে তাহলে আপনার চুল বৃদ্ধি হতে পারে না। ঠিক সেই কারণেই চুল
ঘন হতে পারে না। চুলে পুষ্টি পৌছানোর জন্য হেয়ার ফলিকল অত্যন্ত
উপকারী। কিন্তু এই হেয়ার ফলিকল সঠিকভাবে কাজ না করার কারণে চুলে পুষ্টি
পৌছায় না। অতিরিক্ত ঘামের সাথে ময়লা ও মৃত ত্বকের কোষ মিশে মাথার ত্বকে
ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে।
এই সংক্রমণগুলি চুলের গোড়া দুর্বল করে এবং চুল পড়ার কারণ হতে পারে। তাই চুল
পড়া বন্ধ করতে সব সময় মাথা পরিষ্কার রাখবেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান
করবেন। কারণ পানিশূন্যতা মাথার ত্বক শুষ্ক করে তুলতে পারে এবং চুল পড়ার ঝুঁকি
বাড়াতে পারে। এছাড়াও মানসিক চাপের কারণে চুল পড়তে পারে। কারণ মানসিক চাপ চুল
পড়ার একটি কারণ । আশা করি মাথা ঘামলে কি চুল পড়ে এই সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা
পেয়েছেন।
অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়
শরীরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ রাখার ঘাম খুবই প্রয়োজন। সকল মানুষের ঘাম হয়ে
থাকে। কারো বেশি আবার কারো কম। তবে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঘাম হওয়া দরকার তবে
অতিরিক্ত ঘামলে বিভিন্ন রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সমস্যা থেকে
মুক্তি পেতে অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন
তাহলে জেনে নিন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ অতিরিক্ত ঘাম দূর করার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান
করা খুবই জরুরী। কারণ শরীরে অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তবে
পানি পান করার ফলে পানি শূন্যতা দূর হয়। এতে করে শরীর অনেক সুস্থ
থাকে।
লেবুর রস ও পানি পান করুনঃ এক গ্লাস পরিষ্কার ঠান্ডা পানি সঙ্গে লেবুর
রস ও এক চিমটি লবণ মিশ্রণ করে খেতে পারলে আপনার অতিরিক্ত ঘাম দূর হয়ে
যাবে।
পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুনঃ শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম দূর করার
জন্য ঘরোয়া ভাবে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন। তাহলে আপনার শরীরের
ঘাম কিছু হইলেও কমবে।
অ্যাপল সিডার ভিনেগারঃ প্রথমে আপনাকে এক গ্লাস পরিষ্কার স্বচ্ছ পানি
নিতে হবে। সেই পানির সঙ্গে ২ চা চামচ অ্যাপল সিঙ্গার ভিনেগার মিশ্রণ করতে হবে।
এরপর সেই মিশ্রণ করা পানির সঙ্গে ২ চা চামচ মধু মিশ্রণ করতে হবে। এরপর মিশ্রণ
করা শেষে খালি পেটে এই মিশ্রণ করা পানি পান করতে হবে। তাহলে আপনার ঘাম অনেকটাই
কমবে। প্রতিদিন খালি পেটে পান করলে অনেক আরাম পাবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন
অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে এবং
মাথা ঘামলে কি চুল পড়ে এই সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি।
আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার
করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে
পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন