পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে
আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আমাদের পেট জ্বালাপোড়া করলে কীভাবে কমানো যায়
সেই সম্পর্কে তেমন একটা ধারনা রাখি না। সেজন্য আমি আজকে একটি সঠিক ধারণা দেয়ার
চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে খাওয়ার পর পেট জ্বালা
করে কেন সে বিষয়েও সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন। এইগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা
প্রয়োজন। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক বিষয়গুলো।
ভূমিকা
আমাদের বিভিন্ন কারণে পেট জ্বালাপোড়া করে। বিভিন্ন খাবার বিভিন্ন রোগের কারণে এই
সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এই সমস্যা যদি আপনি অনেকদিন পর্যন্ত রেখে দেন তাহলে
অনেক সমস্যা হতে পারে। সেজন্য এইটা কমানো উচিত। আজকে আমরা পেট জ্বালাপোড়া কমানোর
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। যদি আপনার সমস্যার সমাধান খুঁজে থাকেন তাহলে
সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে এই আর্টিকেলে সমস্ত বিষয়গুলো আলোচনা করব। আসুন তাহলে
জেনে নেয়া যাক।
পেটে জ্বালাপোড়া করার কারণ
পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কেও আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা
করেছি। পেটে জ্বালাপোড়া করার কারণ অনেক মানুষের হয়ে থাকে। এই জ্বালা পঢ়ার কারণে
মানুষ অনেক রকমের ওষুধ খেয়ে থাকেন কিন্তু তারপরও কাজ হয় না। পেটে গ্যাস্ট্রিক হয়
না এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। গ্যাস্ট্রিক সবারই হয়ে থাকে। গ্যাস্টিক শব্দের
অর্থ হচ্ছে পাকস্থলী। তবে সেই পাকস্থলীতে অনেক মানুষের ঘা অথবা আলসার হয়ে
থাকে।
পেটে অথবা বুকে জ্বালাপোড়া করলেই অনেক সময় অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের
বুকে ও পেটে জ্বালাপোড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে গ্যাস্ট্রোইসুফেজিয়াল রিফ্লাক্স
ডিজিজ(Gastroe sophageal reflux disease)। যেখানে পাকস্থলীর যে এসিড রয়েছে সেটা
উপরে খাদ্যনালীতে উঠে আসে। তবে এটার জন্য অন্যতম দায়ী কারণ হচ্ছে আমাদের
খাদ্যভ্যাস। এর সাথে রয়েছে ফাংশনাল ডিস্পেপশিয়া যা খাদ্যনালীতে সমস্যা হতে
পারে।
খাওয়ার পর পেট জ্বালা
যদি খাওয়ার পর পেটের ওপরে অথবা পেটের মাঝে দিকে জ্বালা করে বা কামড়ে ধরার মতো
ব্যথা হয় তাহলে অবশ্যই সতর্ক হবেন। কারণ পেপটিক আলসার আপনার শরীরে বাসা বাঁধার
চেষ্টা করতেছে। তাই আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে থেকেই খুব সতর্ক হয়ে নিন এবং
খাওয়ার পর পেট জ্বালা কেন করে এই সম্পর্কে সবকিছু জেনে নিন।
অনেক সময় দেখা যায় যে খাবার সামনে দেখলেই অরুচি ভাব চলে আসে। কিছু খেলেই যেন
পেটে ভীষণ জ্বালা করে। যদি এমনটা হয় তাহলে কখনো অবহেলা করবেন না। হতে পারে
এরকম হওয়ার কারণে আপনার পেপটিক আলসারের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। সেজন্য অবশ্যই
সতর্ক থাকবেন। আলসার শব্দের অর্থ হচ্ছে ক্ষত। আর এই ক্ষত পরিপাকতন্ত্রের
বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে।
সেটা থেকে পরবর্তী সময়ে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যদি আপনার খাদ্যনালীতে
অধিক পরিমাণে এসিড উৎপন্ন হয় তাহলে এই রোগ হতে পারে। তাছাড়াও এইচ পাইলোরি
নামক একটি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। সেটা থেকেও এই সংক্রমণ হতে পারে। এই সংক্রমণের
কারণে আপনার শরীরের ভিতরে বিভিন্ন আলসার দেখা দিতে পারে। এই আলসার থেকে
পরবর্তীকালে আপনার অনেক বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই আলসার
সম্পর্কে জেনে আপনি আগে থেকেই সচেতন হন।
আলসার হওয়ার কিছু লক্ষণঃ
- আপনি একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন যে যদি আপনার পেটের উপরে অথবা পেটের মাঝের দিকে ভীষণ জ্বালা করে বা কামড়ে ধরে ব্যথা হয়। তাহলে অবশ্যই সতর্ক হবে। এইগুলো আলসারের হওয়ার লক্ষণ।
- আপনি যদি খাবার খান। তাহলে খাবার খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘন্টা পর যদি আপনার পেটের ব্যথা বেড়ে যায়। তাহলে ধরে নিবেন আপনার আলসারের লক্ষণ হতে পারে।
- খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই যদি আপনার পেটে ভীষণ ব্যথা বাড়ে তাহলে আলসারের হতে পারে।
- বুক জ্বালা করলে আমরা অনেক মানুষ রয়েছি কোন কিছু মনে করি না। কিন্তু যদি আপনার ঘন ঘন এই বুক জ্বালা হয় তাহলে আলসারের লক্ষণ হতে পারে।
- সব সময় যদি বমি ভাব এরকম সমস্যা হয় বা গা গলানো এরকম সমস্যা হয়। তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের কাছে থাকে পরীক্ষা করে নিবেন যে আলসার হয়েছে কি না।
অনেকেই রয়েছে ভেবে থাকেন যে ঝাল তেল মসলা এগুলো খাবার খেলে আলসার হয়। হ্যাঁ
এগুলোর কারণেও হয়। কিন্তু এই রোগের সমস্যা আরও তীব্র কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলে
ধূমপান এবং মদ্যপান। এই ধূমপান এবং মধ্যপান করার ফলে আলসারের সম্ভাবনা অনেক
বেশি বেড়ে যায়। এতে করে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই এগুলো থেকে আপনি অবশ্যই
বিরত থাকুন। অতিরিক্ত সমস্যা হলে আপনি অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায়
পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। যদি আপনার এই সকল সমাধান প্রয়োজন পড়ে। তাহলে ধৈর্য সহকারে আমাদের এই
পোষ্টটি পড়ুন। আশা করি এই সমস্ত কিছু পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। অনেক সময়
দেখা যায় যে পেটের উপরের দিকে একটু একটু ব্যথা করে ও জ্বালাপোড়া করে। এইটা
হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ভাজাপোড়া।
অধিকাংশ সময় দেখা যায় পেট খারাপ, পেটে জ্বালাপোড়া, পেটে ব্যথা, এগুলো দেখা
যায়। এই সব তেলে ভাজা জিনিস খাওয়ার ফলে হয়ে থাকে বা অন্যান্য কারণেও হয়ে
থাকে। সাধারণত লোকজন গ্যাস্টিক বা আলসার বলতে যা বোঝেন সেটা হচ্ছে পাকস্থলী।
এই পাকস্থলীতে অতিরিক্ত পরিমাণে এসিড তৈরি হওয়ায় এই সমস্যা দেখা দেয়। অনেক
ধূমপান করলে, বেশি বেশি তেলের ভাজাপোড়া জিনিস খেলে, অতিরিক্ত টেনশন করলে,
এইগুলো সমস্যা হয়।
যা দেখে বুঝবেনঃ
- খাওয়ার কিছুক্ষণ পর পেটে ব্যথা বাড়লে বুঝতে পারবেন
- পেটের উপরের দিকে ব্যথা হবে ও জ্বালাপোড়া করবে
- বদহজম হওয়া
- একটু পর পর ঢেকুর উঠা
প্রতিরোধঃ
- নিয়মিত ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করবেন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাবেন।
- ধুমপান বন্ধ করবেন।
- দুশ্চিন্তা করলে দুশ্চিন্তা পরিহার করবেন।
পেট জ্বালাপোড়া করা রোগীরা সাধারণত এন্টাসিড এবং এই জাতীয় ওষুধ সেবন করে
উপকৃত হয়ে থাকেন। তবে দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ খাওয়ার পরে যদি রোগী ভালো না হয়।
কিছু খেলে বমি এসে যাই সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়া উচিত
হবে। পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আশা করি বুঝতে
পেরেছেন।
খাওয়ার পর পেট জ্বালা করে কেন
খাওয়ার পর পেট জ্বালা করে কেন এইটা আমাদের জানা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে
মানুষের পেট জ্বালাপোড়া করে তেল জাতীয় ভাজাপোড়া খাওয়ার ফলে। এখন কার মানুষ
এই ঝাল খাবার বেশি খেয়ে থাকেন। বর্তমানে আমাদের দেশে এসিডিটি ও হজম
সংক্রান্ত নানা রোগের সমস্যায় ভুগেন। সেই সঙ্গে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পর
পেটে জ্বালাপোড়া সমস্যা দেখা দেয়। ভাজাপোড়া খেলে পেটের জ্বালাপোড়ার
সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা দেয়।
মাঝেমধ্যে পেট জ্বালা করে আবার মাঝেমধ্যে বুক জ্বালা করে এটি একটি সাধারণ
সমস্যা হয়ে গেছে। কিন্তু এই সমস্যা সাধারণভাবে দেখলে অনেক বড় ধরনের ক্ষতি
হতে পারে। খাওয়ার পর পেট জ্বালা করে কেন এইটা নিয়ে অনেক মানুষ অনেক প্রশ্ন
করেছেন। আজকে আমি সেই বিষয়ে একটি সঠিক ধারণা দিতে চলেছি। আসুন তাহলে আর দেরি
না করে সেই বিষয়গুলো জেনে নিন।
খাওয়ার খাওয়ার পর পেটে জ্বালাপোড়া অনেক কারণে হতে পারে। আপনি বাইরে কোথাও
ঝাল জাতীয় খাবার খেলে এই সমস্যা দেখা দিয়ে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে মসলা
জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন সেজন্য এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। অত্যাধিক পরিমাণে
মসলাযুক্ত খাবার খেলে স্বাদ লাগে বটে কিন্তু খাওয়াটা উচিত নয়। এতে করে মুখ,
গলা, বুক, পেট, সব কিছুই জ্বালাপোড়া করবে। পেটে ব্যথাও বাড়তে পারে
সেজন্য অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল দেওয়া কোন জিনিস খাবেন না। এই ঝাল কোনো জিনিস
খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এতে করে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে।
পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঔষধ
পেট জ্বালাপোড়া কমানোর ঔষধ সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করভ। যদি আপনার এই
ওষুধ সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে তাহলে মনোযোগ সহকারে দেখুন। আশা করি এইগুলো
ওষুধ খেয়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর ওষুধ সেবন
করেন।
অ্যান্টাসিডঃ এই অ্যান্টাসিডে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম এবং
এ্যালুমিনিয়ামের লবণগুলি যা পাকস্থলীর এসিড কে নিয়ন্ত্রণ করে পেট ও বুকের
ব্যথা এবং জ্বালা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটারসঃ এই ওষুধগুলি পাকস্থলী যে এসিড রয়েছে
সেটা উৎপাদন হ্রাস করে। এতে করে উপসর্গগুলি কমে যায় এবং জ্বালা উপশম হয়। এই
ধরনের আরো কয়েকটি ওষুধ রয়েছে চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
কিছু ওষুধের নামঃ
- ওমিপ্রাজোল।
- প্যান্টোপ্রাজোল।
- এসোমিপ্রাজোল।
- রাবেপ্রাজোল।
পেট জ্বালাপোড়া কমানোর দোয়া
দোয়া হচ্ছে একটি ইবাদত। যেকোনো সময় আমরা দোয়া পড়তে পারি। হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের দোয়া
শিখিয়েছেন। পেট জ্বালাপোড়া কমানোর দোয়া সম্পর্কে যদি জানা না থাকে
তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।
প্রথমেঃ এক গ্লাস পরিষ্কার পানি নিবেন।
দ্বিতীয়ঃ দরুদ শরীফ পড়ে নিবেন তিন বার।
তৃতীয়ঃ (আল আজিমু) এই দোয়া পড়ে নিবেন।
চতুর্থঃ দরুদ শরীফ পড়ে নিবেন তিন বার।
এই দোয়া পড়ে পানিতে ফু দিয়ে সেই পানি টুকু খেয়ে নিবেন আল্লাহ্ তায়ালার ওপর
ভরসা করে। আশা করি পানি খাওয়ার পর আল্লাহ্ রহমতে একটু হলেও আরাম পাবেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি পেট জ্বালাপোড়া কমানোর
ঘরোয়া উপায় এবং খাওয়ার পর পেট জ্বালা করে কেন সে ব্যাপারে একটি
সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে
থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে
আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন