প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো বাচ্চাদের কাশির সিরাপের নাম সম্পর্কে কোনো পোস্ট খুজতেছেন চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনাদের সমস্যাা সমাধানের জন্য আজকে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং আরো জানবো শুকনো কাশির সিরাপ ইত্যাদি। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে আলোচনা করা যাক।
বর্তমানে বাংলাদেশের কাশি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।আজকে আমরা এই পোস্টে বড়দের কাশি সিরাপ এর নাম ও কাশি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানব। তাহলে পোস্টটি সম্পর্কে জানতে হলে মনোযোগ সহকারে পরার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকা
কাশি সমস্যা ছোট বড় সবারই হয়ে থাকে। কারো ক্ষণিকের জন্য কাশি হয় আবার কারো দীর্ঘমেয়াদী কাশিতে ভুগে। দীর্ঘমেয়াদী কাশি হলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে।অনেকের খুশখুসে কাশি হয়ে থাকে আবার অনেকের কফ যুক্ত কাশি হয়।কাশি রোগ হলে গলা সর ভেঙে যায়, সমস্ত শরীর ব্যথা করে ও ঘুমের ব্যাঘাতের সৃষ্টি হয়।
তাই কাশির সমস্যা হলে অতি দ্রুত ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা উচিত। আমরা এই পোস্টে বাচ্চাদের কাশির সিরাপের নাম,বড়দের কাশি সিরাপ এর নাম,কাশি হলে কি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে আলোচনা করা যাক।
কাশির সিরাপ এর নাম
বর্তমানে কাশি রোগীর সংখ্যা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকছে। কাশি একটি সাধারন সমস্যা তবে। এই কাশি যদি ভালো হতে না চায় তাহলে এটি একটি বড় ধরনের ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে কাশি হতে পারে আবার ঠান্ডা লেগে যাওয়ার কারণেও কাশি হতে পারে। একবার অনেকেই ধূমপান করার কারণে ও শরীর ঘামা অবস্থায় গোসল করার কারণে কাশি হয়ে থাকে।
কাশি হলে কাশতে কাশতে বুকে পেটে ব্যথা সৃষ্টি হয়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। কাশি সাধারণত দুই প্রকার শুকনা ও শ্লেষ্মা। কাশি ছোট বড় উভয়ের হতে পারে। শুষ্ক কাশির সাথে কোন প্রকার কফ নির্গত হয় না। তবে শ্লেষ্মা কাশির সাথে কফ নির্গত হয়। অনেক সময় পাবলিক প্লেসে কাশি শুরু হয়ে গেলেও শেষ হতে চাই না তখন মানুষ লজ্জার সামনে পড়ে যায়।
আজকে আমরা কাশির সিরাপ এর নাম সম্পর্কে জানব। বর্তমানে কোন সিরাপ গুলি গ্রহণ করলে কাশি থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া যায় সে সম্পর্কে। তবে কাশির সিরাপ ব্যবহার করার পূর্বে নিশ্চয় ডক্টরের নিকটবর্তী হয়ে পরামর্শ নিয়ে শিরাপ গ্রহণ করা উচিত।অরে চলুন কাশির সিরাপ এর নাম জেনে নেওয়া যাক।
বড়দের কাশি সিরাপ এর নাম
অফকফ সিরাপঃ শুষ্ক কাশি দূর করতে অফকফ সিরাপ বেশ কার্যকর। ঠান্ডা লাগা ও কাশির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই যারা বড়রা কাশিতে ভুগছেন তারা ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে অফকফ সিরাপ খেতে পারেন।
এডোভাস সিরাপঃ এডভাস সিরাপ হলো স্কয়ার কোম্পানির সিরাপ।এডোভাস সিরাপ খুবই ভালো মানের তাছাড়া কাশির সমস্যায় ভুগছেন তারা ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে এডোভাস সিরাপটি গ্রহণ করতে পারেন।
পিউরিসাল সিরাপঃ কাশির জন্য পিউরিসাল সিরাপ খুবই ভালো। এই সিরাপটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বড় ছোটরা খেতে পারে। তবে গর্ভবতী মহিলারা এই সিরাপটি খাওয়া যাবে না।
তুসকা প্লাস সিরাপঃ কাশির জন্য তুসকা প্লাস কার্যকর। যারা গলা ব্যথা শুষ্ক কাশি বা বুকের ভিতর কফ জমে আছে তাদের জন্য তুসকা প্লাস সিরাপ খাওয়া প্রয়োজন। তবে খাওয়ার পূর্বে নিশ্চয় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া উচিত।
টমিফেন সিরাপঃ টমিফেন সিরাপ শুষ্ক কাশি ভালো করতে কার্যকর। শুষ্ক কাশি দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । এই ওষুধটা খেলে বমি বমি ভাব ও মাথা ঝিমঝিম করতে পারে। তাই অবশ্যই এই ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বাচ্চাদের কাশির সিরাপের নাম
বর্তমানে বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও কাশির সমস্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকছে।। তাই বাচ্চাদের বাবা-মার উচিত বাচ্চাদেরকে সবসময় ঠান্ডা থেকে রক্ষা করা। বাচ্চাদের কাশি হয়ে গেলে নিচে থাকা ওষুধ গুলো ডক্টরের পরামর্শ অনুযায় খাওয়ালে বাচ্চা দ্রুত কাশি থেকে রেহাই পাবে।
বাচ্চাদের কাশির সিরাপের নাম
Ecof
Remocof
Tusca Plus
Adovas
Adolef
শুকনো কাশির সিরাপ
শুকনো কাশি হলে গলার ভিতরে যেন কফ জমে আছে এমন মনে হয়।শুকনো কাশি কে দূর করার জন্য নিচে দিয়ে ওষুধগুলো ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার ফলে শুষ্ক কাশি থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া সম্ভব।
- Ocof
- Abex
- Nectar
- Madhuvas
কাশি দূর করার উপায়
ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে কাশির ব্যাপকভাবে দেখা দিতে থাকে।দীর্ঘদিন ধরে কাশি হতে থাকলে যদি ভালো না হয় পরবর্তী সময়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যক্ষা, নিউমোনিয়া , ও ফুসফুসের সংক্রমণের কারণেও কাশি হয়ে থাকতে পারে। কাশি হওয়ার কারণে গলা ব্যথা,বুক ব্যথা হয়ে থাকতে পারে।অতিরিক্ত কাশি হওয়ার কারণে রাতের বেলায় ঘুমে দেখা সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে ঠান্ডা লাগার, আবহাওয়া পরিবর্তনের পাশাপাশি ও ধূমপান করার কারণে কাশি সৃষ্টি হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন এক টানা কাশি হওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই কাশি সমস্যা দূর করার জন্য ডক্টরের কাছে গিয়ে ঔষধ খাওয়া প্রয়োজন। তবে ঘরোয়া পদ্ধতি কাশি ভালো করার কিছু পদ্ধতি আছে। সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
তুলসী পাতাঃ কাশি নিরাময়ের জন্য আমরা তুলসী পাতা দিয়ে চা করে খেতে পারি। তুলসী পাতার চা কাশির জন্য বেশ উপকারী। তাই চায়ের ভিতরে কয়েকটা তুলসী পাতা দিয়ে চা তৈরি করে খেলে কাশি থেকে রেহের পাওয়া সম্ভব।
মধুঃ কাশির সমস্যা ভালো করতে মধু খাওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিন যদি দুই বেলা এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক চা চামচ মধু আর লেবুর রস আর সামান্য আদা মিশিয়ে খাওয়া যায়। তাহলে কাশি থেকে আরাম পাওয়া সম্ভব। আবার ঘুমানোর আগেও যদি মধু -দুধ এর সাথে মিশিয়ে খান তাহলে ও সাথে সাথে উপকার পাওয়া যায়।
গার্গেল করাঃ কাশি ও গলা ব্যাথা থেকে মুক্তি পাবার জন্য প্রতিদিন গার্গেল করা উচিত।কুসুম গরম পানির সাথে সামান্য পরিমাণে নুন দিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট গার্গেল করলে কিছুটা হলেও কাশি থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
বাসক পাতাঃ গ্রামের মানুষেরা অনেকেই বাসক পাতা খেয়ে কাশি সমস্যা দূর করে। বাসক পাতা কাশি দূর করতে বেশ কার্যকর। সিদ্ধ করে তারা রশ বের করে সামান্য পরিমাণে চিনি মিশিয়ে খেলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে কাশি থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
লবঙ্গঃ লবঙ্গ খুসখুসে কাশি থেকে রেহাই দিতে বেশ কার্যকর। এক থেকে দুইটা লবঙ্গ মুখের ভিতর রেখে দিলে কাশি থেকে আরাম পাওয়া যায়।
আদাঃ আদা কাশির জন্য বেশ উপকারি। কাশি দূর করার জন্য আদা সাথে নুন মাখিয়ে খাওয়া যায়। আবার আদা ছেঁচে যা করে খেলে কাশি থেকে আরাম পাওয়া সম্ভব। তাই প্রত্যেকের চেষ্টা করবেন আদা চা বা আদা - লবণ দিয়ে খাওয়া।
দুধের সঙ্গে হলুদ মিশে খাওয়াঃ দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে প্রতিদিন রাতের বেলায় যদি খাওয়া হয়। তাহলে সর্দি ও কাশি থেকে উপকার পাওয়া সম্ভব। তাই কাশিও ভালো করতে দুধ ও হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করব। প্রতিদিন রাতের বেলায় দুধের সাথে হলুদ মিশে খাওয়া উচিত।
কাশি কেন হয়?
কাশি হলে দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম কমে যায়। সাধারণত কাশি দুই প্রকারের একটা স্বল্প স্থায়ী কাশি আর একটা দীর্ঘস্থায়ী কাশি। স্বল্প স্থায়ী কাশি অল্পতেই সেরে যায় তবে দীর্ঘস্থায়ী কাশি সারতে অনেক সময় লাগে। কাশি এমনি সৃষ্টি হতে পারে আবার ভাইরাস জনিত কারণেও কাশি সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমরা কাশি কিসের কারণে হয়ে থাকে সে সম্পর্কে জানবো তাহলে চলুন কাশি কেন হয় সে সম্পর্কে জানা যাক।
- নিউমোনিয়া
- যক্ষা
- হাঁপানি
- ধূমপান
- ধুলাবালি মিশ্রিত বাতাস
- এলার্জি
- ফুসফুসের সংক্রমণ
- ফুসফুসের ক্যান্সার
- ব্রঙ্কিয়েক্টাসিস
- সাইনোসাইটিস
- জীবাণুযুক্ত ধুলাবালি
অতিরিক্ত কাশি কিসের লক্ষণ
কাশি বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। বর্তমানে প্রায় সবারই কাশি প্রবলেম হয়ে থাকে। অনেক কাশি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সেরে যায় আবার অনেকের দীর্ঘ মেয়াদি কাশিতে ভুগে। এই কাশি সমস্যা দূর করার জন্য ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী সিরাপ ও ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হবে।তাহলে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
তবে দীর্ঘ মেয়াদি কাশি থেকে গেলে এই কাশি পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রোগের সংকেত হিসেবে প্রকাশ পায়।অনেকেই সিগারেট ও অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে। ফুসফুসে ইনফেকশনের মাধ্যমে অনেক সময় ক্যান্সারের সৃষ্টি হতে পারে।অনেক সময় অতিরিক্ত কাশি ক্যান্সারের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়।
তাই কাশি ভালো হতে দেরি হলেও অতি দ্রুত চিকিৎসকের নিকট যাওয়া উচিত। কাশিকে অবহেলা করলে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ক্যান্সার হলে কাশির পাশাপাশি মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়, গলার কণ্ঠস্বর ভেঙ্গে যায় ও শরীর সব সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তাই কাশিকে অবহেলা না করে ডাক্তারের কাছে গিয়ে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
কাশির ট্যাবলেট এর নাম
অনেকেই জানতে চাই কাশির ট্যাবলেট এর নাম কি? আজকে আমরা কয়েকটা কাশির ট্যাবলেট এর নাম বলব। যা শুকনোকাশি দূর করতে সাহায্য করে। তবে ওষুধ গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে তারপর ট্যাবলেট সেবন করা উচিত।কাশি নিরাময়ের জন্য নিচে কিছু ট্যাবলেটের নাম দেওয়া থাকলো।
- Tofen
- Totifen
- Ketomar
- Prosma
- Toti
- Fenat
- Ketifen
- Alarid
কাশি হলে কি খাওয়া যাবে না
কাশি হলে সব খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়। কাশি হলে কিছু খাবার পরিত্যাগ করা উচিত। না হলে কাশি বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে কাশি হয়ে থাকে । কাশি সাধারণত দুই প্রকার শুকনা ও শ্লেষ্মা।কাশিকে ভালো করতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিরাপ ও ট্যাবলেট সেবন করতে হয়। আজকে আমরা কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে দেখা যাক কাশি হলে কোন কোন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- তরমুজ খাওয়া যাবেনা।
- ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাওয়া যাবেনা।
- আঙ্গুর ফল ও কমলা খাওয়া যাবেনা।
- অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।
- ক্যাফেইন যুক্ত পানি পান করা যাবে না।
- কলা খাওয়া যাবেনা।
- অ্যালকোহল যুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।
- সিগারেট খাওয়া যাবেনা।
অবশেষে বলা যায়
কাশির জটিলতার দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকলে অসুস্থতার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। কাশি থেকে মুক্তি পেতে সব সময় আমাদের প্রথমের ডক্টরে পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করলে কাশি থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া সম্ভব। আমাদের বাচ্চাদের কাশির সিরাপের নাম নিয়ে লেখা পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট পাওয়া পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।
إرسال تعليق